শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

অতলান্তিকে সেন্টিয়াগো, ম্যানোলিন আর আমার মৃত্যুর গল্প ! ৪ পর্বের গল্পটির পর্ব # ১ [ চলার পথের গল্প # ১১ ]


:

[আর্নেস্ট হেমিংওয়ের নোবেল পুরস্কার বিজয়ি The Old Man & The Sea'র প্রধান চরিত্র সেন্টিয়াগোর রূপকে গল্পটি লিখিত]


The Old Man & The Sea পড়ার পর থেকে বুড়ো সেন্টিয়াগোর সাথে দেখা করার প্রবল ইচ্ছে জাগে আমার। ওল্ড ম্যান অব দ্যা সির সেই বুড়ো সেন্টিয়াগো, যার ভাঁজ পড়া চামড়ার ফাঁকে ফাঁকে জমেছিল শুকনো বরফকুচি- নীল মার্লিন শিকারের সুতীব্র আকাংখা ছিল আজন্ম। শীতার্থ ওক বৃক্ষের বাড়িটি বরফে ঢেকে গিয়েছিল তাঁর। ঘুটঘুটে অন্ধকার ঘেরা বন্ধনীর জীবনচক্র ছেড়ে, হারপুণ হাতে সমুদ্রে নেমেছিল নীল মার্লিনের জন্যে। অস্থির, ক্ষীণায়ু তাৎপর্যহীন জীবনটাকে টেনে, নিরর্থক সুন্দরের করুণ লড়াই করেছিল সে। বিনাশের অভিন্ন সূত্রে গাঁথা জীবন বয়ে বয়ে- অরাষ্ট্র্রে অখাপ খাওয়া বাতাস আর বৃষ্টিধারার মত, তাঁর দ্রোহ অব্যক্ত ছিল হৃদ-রক্তক্ষরণের ভেতরেই। নিষ্ঠুর হাঙরেরা তৃপ্তির অঘোর ঘুমের সময়- তার প্রাপ্তির মার্লিনকে খুবলে খুবলে রক্তাক্ত করল। অতএব মাথায় ঘুণ পোকারা ঢুকে নেচে উঠলো সেন্টিয়াগোর কাছ যাবেই যাবে। কিউবার হাভানা থেকে ২০-কিমি উত্তরে সেন্টিয়াগোর কোহিমার জেলেপল্লীতে যাবো আমি। দেখবো সেন্টিয়াগো, তার বাড়ি, কোহিমা জেলেপাড়ার মানুষ, তার ডিঙি, হারপুণ আর কিশোর ম্যানোলিনকে।

:

ঢাকা থেকে আমিরাত ফ্লাইটে দুবাই-ফ্লোরিডা হয়ে হাভানা পৌছলাম পাক্কা ২-দিনের পঞ্চমুখি ঝক্কিতে। হাভানার José Martí Airport-এ নেমেই ট্যাক্সি নিলাম উত্তর আটলান্টিকের তীরবর্তী 'সান্তা ক্লারা' শহরের। সান্তা ক্লারার পাশেই ছোট্ট গাঁ কোহিমাতেই থাকে বুড়ো সেন্টিয়াগো তার হারপুণ, ছোট ডিঙি আর ম্যানোলিন। শান্তা ক্লারা নেমে সুখ ডানার জন্মনেয়া রঙিন প্রজাপতির পাখায় উড়ে উড়ে চললাম কোহিমা জেলেপল্লীতে। সন্ধ্যার প্রাক্কালেই জেলেরা প্রায় সবাই ফিরে এসেছে তাদের পুরণো নৌকা, পাল, আর মাছ শিকারের যন্ত্রপাতি নিয়ে কোহিমাঘাটে। শিকারের মাছ আর নৌকার ভ্যাপসা গন্ধেও আমার সুখ পাখির হাঁসেরা উড়ে চলে আশ্চর্য তরঙ্গ ঢেউ তুলে নিখিল শব্দমাঝে। আনন্দ মৃত্তিকার টিলা, চোলাই মদের দোকানে দেহজীবী নারী, আর ওক গাছের বন পেরিয়ে আমি জীবনপথে হেঁটে হেঁটে পৌঁছে যাই বুড়ো সেন্টিয়াগোর সমুদ্রসেতুতে গড়া ঘাসের ছাদ দেয়া কুটিরের কাছে। পেজা তুলোর মত বরফে মননের ঘাসশিশুরা হেসে ওঠে বারবার আমার পথচলা দেখে। 




লেখাটি ফেসবুকে দেখতে চাইলে নিচের লিংকে যান প্লিজ




https://scontent.fmaa1-2.fna.fbcdn.net/hphotos-xpt1/v/t1.0-9/11174759_1685896871644462_4497387317852221911_n.jpg?oh=ff7dda610e80ca38090e78bbcec47be4&oe=566C542D


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন